সূরা আল কাওসার আল কুরআনের ১০৮তম সূরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর আয়াত সংখ্যা ৩টি। এ সূরার প্রথম আয়াতের শেষ শব্দ আল কাওসার থেকে এর নামকরণ করা হয়েছে সুরা আল কাওসার।
শানে নুরুল
রাসুলুল্লাহ (সা:)-এর পুত্র কাসেম অথবা ইবরাহিম যখন শৈশবেই মারা গেলেন, তখন মক্কার কাফিররা তাঁকে )الأب( বা নির্বংশ বলে উপহাস করতে লাগল। তাদের মধ্যে আস ইবনে ওয়ায়েল-এর নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। তার সামনে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আলোচনা হলে সে বলত, আরে তার কথা বাদ দাও, সে তো কোনো চিন্তারই বিষয় নয়। কারণ সে নির্বংশ। তার মৃত্যুর পর তার নাম উচ্চারণ করার মতো কেউ থাকবে না। এর পরিপ্রেক্ষিতে সুরা আল কাওসার অবর্তীর্ণ হয়। (ইবনে কাসির, মাযহারী)
শব্দার্থ
ব্যাখ্যা
সূরা কাওসারের শুরুতে মহান আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে কাওসার তথা ইহকাল ও পরকালের যাবতীয় কল্যাণ দেওয়ার সুসংবাদ দিয়েছেন। কাওসার অর্থ হাউজে কাওসার। হাউজে কাওসার হলো জান্নাতের একটি ঝরনা, যার কিনারা স্বর্ণের, তলদেশ মণি-মুক্তার, যার মাটি মিশক থেকেও সুগন্ধি, যার পানি মধুর চেয়েও মিষ্টি। এই মহান পুরস্কারের কৃতজ্ঞতাস্বরূপ তাঁকে দু'টি বিষয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সে দু'টি হলো সালাত ও কুরবানি। পুত্রসন্তান না থাকার কারণে কাফিররা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে আবভার বা নির্বংশ বলে গালি দিত। এর জবাবে বলা হয়েছে যে, শুধু পুত্রসন্তান না থাকার কারণে যারা রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে নির্বংশ বলে, তারা তাঁর প্রকৃত মর্যাদা সম্পর্কে বেখবর। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বংশগত সন্তান-সন্ততিও কিয়ামত পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে, যদিও তা কন্যা সন্তানের দিক থেকে হয়। একদিকে শত্রুদের উক্তি নস্যাৎ করে দেওয়া হয়েছে, অপরদিকে আরও বলা হয়েছে যারা আপনাকে নির্বংশ বলে প্রকৃতপক্ষে তারাই নির্বংশ।
শিক্ষা ১. রাসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহ তা'আলার কাছে সর্বাধিক প্রিয় ও সম্মানিত। ২. কিয়ামতের দিন রাসুল (সা.) হাউজে কাওসারের মালিক হবেন। তিনি তাঁর প্রিয় উম্মতকে এখান থেকে পানি পান করাবেন। ৩. যারা রাসুলের অনুকরণ অনুসরণ করবে না, তারা কাওসারের পানি পান করার সৌভাগ্য লাভ করবে না। ৪. সালাত যেমন শারীরিক ইবাদাতের মধ্যে অন্যতম, তেমনি কুরবানি আর্থিক ইবাদাতের মধ্যে অন্যতম। ৫. প্রিয়নবি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর বিরোধিতা করার পরিণাম খুবই মারাত্মক। |
দলগত কাজ শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের সাথে সুরা আল কাওসার তিলাওয়াত করবে। এরপর সুরাটির অর্থ খাতায় লিখে শিক্ষককে দেখাবে। |
আরও দেখুন...